দেবাদিদেব মহাদেব যাহা মহামায়া আদ্যাশক্তির নিকট কীর্তন করিয়াছিলেন, মনীষীগণ তাহাই জগতের হিতার্থে সংসার মাঝে ব্যক্ত করিয়াছেন | শান্তিকর্ম্ম, বশীকরণ, স্তম্ভন, বিদ্বেষন, উচ্চাটন, মারণ এই সর্ববিধ কর্ম্ম শট কর্ম্ম নামে অভিহিত | ইহার দ্বারা মানবগণ অনায়াসে অলৌকিক কার্য্য সাধন করিতে পারে, তবে শাস্ত্রোক্ত নিয়মে এই সকল কার্য্য করিলে সদ্যফল লাভ করা যায় |
যাহাদের দেবতা ও মন্ত্রে বিশ্বাস আছে , তাহারা এই শট কর্ম্ম এর সাহায্যে মানব বুদ্ধির অতীব অত্যত্ভুত ব্যাপার সুসম্পন্ন করিতে পারে এবং কখনোই ফল লাভ ব্যর্থ হন না |
বশীকরণ
দেবী – বাণী |
কাল – ( দিবার প্রথম দশ দণ্ড ) |
দিক – পূর্বমুখ |
আসন – স্বস্তিকাসন |
মুদ্রা – পাশমুদ্রা |
তত্ত্ব – বহ্নিতত্ত্ব |
মন্ত্র শেষে যুক্ত – স্বাহা |
যথাবিধি ন্যাস, প্রাণায়াম ভূতশুদ্ধি প্রভৃতি সমাপ্ত করে সাধ্যমত উপচারে দেবী বাণীর পূজা করে কর্ম করাই শাস্ত্র সম্মত |
বিঃ দ্রঃ – সাধারণতঃ কোনও স্ত্রী বা পুরুষকে বশ করার জন্য বশীকরণ প্রয়োগ হয় | আবার অনেক ক্ষেত্রে – বেশ্যা , শত্রু , রাজা , রাজকর্মচারী , প্রভু প্রভৃতিকেও বশ করার জন্য এটি প্রয়োগ করা হয় |
এই বশীকরণ প্রয়োগ সিদ্ধি নিম্নলিখিত ভাবে করতে হবে |
যথা -” ওঁ অস্য শ্রীবামদেব মন্ত্রস্য সন্মোহন ঋষি: | গায়ত্রীচ্ছন্দ: , শ্রীকামদেব দেবতা অমুকবশ্যার্থে জপে বিনিয়োগঃ|
উপরোক্ত মন্ত্রে যেখানে অমুক শব্দ আছে , সেখানে অভিলষিত স্ত্রী বা পুরুষের নাম উচ্চারণ করবেন | তারপর নিম্ন মন্ত্রে ষড়ঙ্গন্যাস করবেন | যথা –
অঙ্গন্যাস – ” কাং হৃদয়াং নমঃ, কিং শিরসে স্বাহা , কুং শিখাওই বসট, কৈয়ং কবচায় হুঁ | কৌঙ নেত্রায় বৌষট | ক: কামদেব দেবতা অস্ত্রায় ফট |”
করন্যাস – ” কাং অঙ্গুষ্ঠাভ্যাং নমঃ , কিং তর্জনীভ্যাং স্বাহা , কুং মধ্যমাভ্যাং বসট , কৈঙ অনামিকাভ্যাং হুঁ ; কৌঙ কনিষ্ঠাভ্যাং বৌষট ; ক: কামদেব দেবতা অস্ত্রায় ফট |” এবার ধ্যান করবেন , যথা –
ধ্যান – জপারুনং রক্তবিভূষণাঢ্যাং চ
মীনধ্বজং চারুকৃতঙ্গরাগম |
করাম্বুজৈরংকুশমিক্ষু চাপং ,
পুষ্পাস্ত্রপাশৌ দধতং নমামিঃ |
এইরূপে ধ্যান করে নিম্নলিখিত মন্ত্র ৫০০০ (পাঁচ হাজার) সংখ্যা জপ করবেন |
মন্ত্র – ‘ ওঁ কামদেবায় সর্বজন প্রিয়ায় সর্বজন সম্মোহনায় জ্বল জ্বল প্রজ্বল প্রজ্বল সর্বজনস্য হৃদয়ম মম বশ্যং কুরু কুরু স্বাহা |’
জপ শেষ করে লাল রক্তকরবী পুষ্পে চামেলী আতর মাখিয়ে দশাংশ অর্থাৎ ৫০০ শত হোম করবেন |
অতঃপর বটুকগণের প্রসন্নতা লাভের জন্য কমপক্ষে তিনটি বালক ভোজন করবে এবং উপরোক্ত মন্ত্র দ্বারা চন্দনকে ১০৮ বার অভিমন্ত্রিত করে , সেই তিলক বালকদের কপালে দিবে | এবার যে ব্যক্তিকে বশ করতে হবে , তার কথা মনে মনে চিন্তা করে বালকের সঙ্গে কথাবার্তা বলবে | মনে করতে হবে , যেন অভিলষিত ব্যক্তির সঙ্গেই কথা বলছি , তাহলেই সেই ব্যক্তি অবশ্য বশীভূত হবে , এতে সন্দেহ নাই |